Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস লিঃ
স্থান

পাবনা জেলার পাকশীতে পদ্মানদীর তীরে হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিকটবর্তী স্থানে

কিভাবে যাওয়া যায়

বাংলাদেশের যে কোন জায়গা হতে রেল অথবা সড়ক পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন অথবা বাস টার্মিনালে নেমে রিক্স/টেম্পু যোগে যাওয়া যায়।

যোগাযোগ

বাংলাদেশের যে কোন জায়গা হতে রেল অথবা সড়ক পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে স্টেশন অথবা বাস টার্মিনালে নেমে রিক্স/টেম্পু যোগে যাওয়া যায়।

বিস্তারিত

 

বার্ষিক ১৫,০০০ মেঃটন মিক্সড জিএসএম এর ভিত্তিতে রাইটিং, প্রিন্টিং, ব্রাউনিং, র‌্যাপার, ব্লু ম্যাচ ইত্যাদি গ্রেডের কাগজ উৎপাদনের জন্য ১৯৭০ সালে পাবনা জেলার পাকশীতে পদ্মানদীর তীরে হার্ডিঞ্জ ব্রীজের নিকটবর্তী স্থানে জার্মান কনসোর্টিয়ামের আর্থিক সহায়তায় তৎকালীন ইপিআরডিসি নর্থ বেঙ্গল পেপার মিলস্ স্থাপন করেন। ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী ইউনিয়নের দিয়ার বাঘইল মৌজায় মিলটি অবস্থিত। মিলটির জমির পরিমাণ ১৩৩.৫৪ একর। কারখানাটি স্থাপনের শেষ পর্যায়ে দেশে স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে ইরেকশনে নিয়োজিত বিদেশী ইরেকটরগণ কারখানাটি কমিশনিং না করেই দেশ ছেড়ে চলে যান। স্বাধীনতা যুদ্ধকালীন সময়ে কারখানাটির ব্যাপক ক্ষতি হয়। পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর স্থানীয় প্রকৌশলী/প্রযুক্তিবিদগণের প্রচেষ্টায় কারখানাটি চালু করা হয় এবং ১৯৭৪ সালে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে উৎপাদন শুরু হয়। বিদেশী বিশেষজ্ঞ কর্তৃক কারখানাটির গ্যারান্টি টেস্ট না হওয়ায় ডিজাইনে ত্রুটি-বিচ্যুতি এবং বিভিন্ন ইউনিটের মধ্যে অসমতা থেকে যায়। এই কারখানাটিতে মন্ড উৎপাদনে অাঁশযুক্ত কাঁচামাল হিসেবে ব্যাপাস (আখের ছোবড়া) ব্যবহৃত হত। পর্যায়ক্রমে দীর্ঘদিন চলাচলে বিবিধ ত্রুটি পরিলক্ষিত হওয়ায় বিগত ১৯৮৮-৮৯ সনে কারখানাটি বিএমআরই করা হয়। যথারীতি উৎপাদন কার্যক্রম বিএমআরই এর পর শুরু হয়। প্রতিদিন কাগজ উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৬০ মেঃটন। কাঁচামাল হিসেবে পুরাতন ও ব্যবহৃত কাগজ ব্যবহার করা হত। ইতোমধ্যে বিগত ১৯৯৫-৯৬ অর্থ বছর থেকে উক্ত কাঁচামালের অস্বাভাবিক স্বল্পতা দেখা যায়। যার প্রেক্ষিতে ১৯৯৪-৯৫ অর্থ বছরে সবুজ পাট হতে মন্ড উৎপাদনের জন্য স্থাপিত গ্রীণ জুট প্রকল্পটি পরিত্যাক্ত হওয়ায় ওয়েস্ট পেপার থেকে মন্ড উৎপাদনের জন্য ব্যবহারের মাধ্যমে মন্ডের ঘাটতি কিছুটা মেটানো হয় এবং কাগজ উৎপাদনের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়। কিন্তু এসব বিবিধ কারণে কারখানাটি কোন সময়ই পূর্ণ উৎপাদন ক্ষমতায় চালানো সম্ভব হয়নি। ফলে মিলটি চালুর পর থেকে অব্যাহতভাবে লোকসান দিয়েছে।

 

কাগজ উৎপাদনে মোট ব্যয়ের ২৫% এনার্জি খাতে ব্যয় হয়। তম্মধ্যে জ্বালানী খাতে ১৫% ও বিদ্যুৎ খাতে ১০% ব্যয় হয়। বিদ্যুৎ চাহিদা পিডিবি বিদ্যুৎ থেকে এবং জ্বালানী চাহিদা ফার্নেস ওয়েল ব্যবহার করে মেটানো হত।পেট্রো বাংলা কর্তৃক বিগত ২০০০-২০০১ সনে গ্যাস সরবরাহ নেটওয়ার্ক অত্র কারাখানা পর্যন্ত সম্প্রসারিত হওয়ায় ভবিষ্যতে গ্যাস ব্যবহারের মাধ্যমে উল্লিখিত খাতসমূহের ব্যয় হ্রাস করা সম্ভব হতে পারে। উৎপাদন ব্যয় কমানোর লক্ষ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস লাইন কারখানার প্রধান গেট পর্যন্ত এলেও বাস্তবে সংযোজন না দিয়েই সরকার কর্তৃক বিগত ৩০/১১/২০০২ তারিখ ৯২৬ জন জনবলকে পে-অফ (চাকুরীচ্যূত) করতঃ কারখানাটি বন্ধ করা হয়।

১৯৮৯ সনের সমাপ্ত বিএমআরই প্রকল্পের পর কারখানাটিতে যথারীতি উৎপাদন কার্যক্রম অব্যাহত রাখা হয়। সরকারী সিদ্ধান্ত মতে গত ৩০/১১/২০০২ তারিখ সমূদয় জনবল (শ্রমিক ৫৮২ জন, কর্মচারী ২৬৭ জন, কর্মকর্তা কেন্দ্রীয় ক্যাডারভূক্ত ৫২ জন, কর্মকর্তা কারখানা পর্যায়ে ২৫জন ) সর্বমোট ৯২৬ জন কে পে-অফ করতঃ কারখানা বন্ধ করা হয়। পে-অফ এর কারণে বন্ধের পর বিসিআইসি জয়েন্ট ভেঞ্চারের মাধ্যমে চালানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এবং নিম্নোক্ত তারিখ সমূহে ইওআই আহবান করেঃ ১ম ইওআই আহবান করা হয় ১০/০৪/২০০৫ খ্রিঃ তারিখ। উক্ত আহবানকৃত ইওআইতে শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠান মেসার্স স্পেক্ট্রা জেনেটিস, দরপত্র দাখিল করেন। যা মন্ত্রণালয়ের পত্র সূত্র নং- শিম/স্বস(বিসিআইসি)পার-২২/২০০৫/৪১৩ তারিখ ১৫/৬/০৬ খ্রিঃ বাতিল বলে গণ্য হয়। ২য় ইওআই আহবান করা হয় গত ১৭/৮/০৬ খ্রিঃ তারিখ। উক্ত দরপত্রে ৬(ছয়)টি প্রতিষ্ঠান যথাক্রমে মেসার্স মেঘনা গ্রুপ, হোসেন পাল্প এন্ড পেপার মিল, মাস্ক গ্রুপ, জাপান বাংলাদেশ গ্রুপ, নিটোল পাল্প এন্ড পেপার, রানা এক্সপোর্ট লিঃ দরপত্র সংগ্রহ করে শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাক্স গ্রুপ দরদাতা দরপত্র দাখিল করেন। যা পরবর্তীতে পত্র নং- শিম/স্বস/বিসিআইসি/পার-২৭/২০০৬/৬৩৪ তারিখ ৫/১১/২০০৬ মাধ্যমে বাতিল পূর্বক পূনঃ দরপত্র আহবানের জন্য নির্দেশ হয়। ৩য় বার ইওআই আহবান করা হয় ০১/২/২০০৭ তারিখ। এ সময় ২টি দরদাতা যথাক্রমে মেসার্স হামিম গ্রুপ, মাক্স গ্রুপ দরপত্র/ইওআই দাখিল করেন। পরবর্তীতে মন্ত্রণালয়ের পত্র নং প্রমকা/প্রাঃকঃ/উপ-পরি -১/০৭/৫৪ তারিখ ০৪/১০/০৭ খ্রিঃ এর সিদ্ধান্ত মতে মিলটি জয়েন্ট ভেঞ্চারের পরিবর্তে বে-সরকারীকরণ খাতে চালানোর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। পে-অফ এর পর জয়েন্ট ভেঞ্চার/বে-সরকারীভাবে চালানোর জন্য প্রচেষ্টা চালানো হলেও অদ্যাবধি চালু করা সম্ভব হয়নি।

 

উল্লেখ্য যে, যৌথ উদ্যোগে বিগত ২০০৩ সনে বিসিআইসি’র গঠিত কমিটির সুপারিশ ২৩/১২/২০০৩ খ্রিঃ তারিখ পূনঃ চালানোর জন্য মেশিনারী ও ইকুইপমেন্ট ক্রয় এবং চলতি মুলধন বাবদ ব্যয়ের জন্য ১৬.০০ কোটি টাকা সরকারী ঋণ প্রদানের প্রস্তাব করা হয়েছিল, যার সূত্র নং বিএন্ডসি/কর্ড/৬০০.১৪/২১৬ তারিখ ০৭/১২/০৩ খ্রিঃ। যা পরবর্তীতে ০৮/০৪/২০০৪ খ্রিঃ মোতাবেক খরচের পরিমাণ আনুমানিক নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩০.০০ কোটি টাকা। কোন প্রস্তাবনাই আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন হয়নি।

যেহেতু দীর্ঘ ৬ বছরের অধিক সময় কারখানাটি বন্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে সেহেতু স্বাভাবিক ক্ষয়ক্ষতিজনিত কারণে ধীরে ধীরে এর কার্যকারিতাও হ্রাস পেয়েছে। এর ফলে মিলটি পু্নঃ চালুর ক্ষেত্রে মেশিনারী ও ইকুইপমেন্ট ক্রয়, রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়সহ চলতি মুলধনের পরিমাণ স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পাবে।

২০০৭ সনে জয়েন্ট ভেঞ্চারের পরিবর্তে মিলটি বিরাষ্ট্রীয়করণের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করলে প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হয়। প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে ২০০৮ সনের শেষার্ধ হতে অদ্যাবধি ২ বার দরপত্র প্রাইভেটাইজেশন কমিশন হতে আহবান করা হয়।

 

সর্বশেষ আহবানকৃত দরপত্রের কার্যকারিতা এখন পর্যন্ত প্রাইভেটাইজেশন কমিশনের নিয়ন্ত্রণাধীন রয়েছে। ফাইনাল কি সিদ্ধান্ত হয়েছে সে ব্যাপারে অদ্যাবধি জানা যায়নি। তবে সম্প্রতি নতুন সরকার দেশ পরিচালনার ভার গ্রহণ করায় বন্ধ কারখানাগুলি পুনঃ চালুর উদ্যোগ গ্রহণ করায় কারখানাটি পুনঃ চালুর লক্ষ্যে বিসিআইসি কর্তৃক একটি উচ্চ পর্যায়ের টীম গত মার্চ, ২০০৯ মাসের শেষার্ধে গঠন করা হয়েছে। বিসিআইসি কর্তৃক গঠিত উচ্চ পর্যায়ের টীম গত ২১/৩/০৯ ও ২২/০৩/০৯ খ্রিঃ তারিখ এ কারখানা সরেজমিনে পর্যবেক্ষণ করেন। উক্ত টীম কর্তৃক কারখানাটি চালুর বিষয়ে রিপোর্ট বাস্তবায়নের বিষয়ে সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে অদ্যাবধিও কাজ চলছে। পে-অফ জনিত কারণে বন্ধ কারখানাটি পুনরায় চালু করার প্রক্রিয়াধীন আছে।