সাধারণতঃ ঈশ্বরদী উপজেলার অধিবাসীগণ শান্তি প্রিয়। বেশীর ভাগ লোক কৃষির সাথে জড়িত। কৃষিতে এ উপজেলাটি খুবই সম্ভাবনাময়। মাঠে মাঠে ধান, গম, আখ, সব্জি এবং ভিটায়- বাগানে লীচু, আমসহ বিভিন্ন ফলের সমারোহ দেখে মন ভরে যায়। এ উপজেলায় বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের মধ্যে সুসম্পর্ক বিদ্যমান। কোন ধর্মীয় বিরোধ নেই। মুসলমান অধিবাসীদের মধ্যে অধিকাংশই সুন্নী মুসলমান। শতকরা হার হিসেবে মোট জনসংখ্যার ৯৪.৯৯ % মুসলমান, ৩.৮৫% হিন্দু, ০.৪৮% খ্রিষ্টান, ০.৭৭% আদিবাসী এবং ০.২৬ % বৌদ্ধ।
দেশের অন্যান্য এলাকার অধিবাসীদের আবাসগৃহের সাথে এ এলাকার আবাসগৃহের মোটামুটি মিল পাওয়া যায়। গ্রাম অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি বাড়ীতে ১-৩ ঘর বিশিষ্ট বসতঘরের সাথে একটি গোয়ালঘর এবং একটি রান্নাঘর রয়েছে। বসতঘরের মধ্যে আংশিক ইটের দেয়ালের উপর টিনের ছাউনি, আংশিক কাঠের ও বাঁশের বেড়ার উপর টিনের ছাউনি। কিছু মাটির বেড়ার উপর খড়ের ছাউনি। তবে মাটির ঘরগুলো খুব দ্রুত কমে যাচ্ছে। মানুষের আর্থ-সামাজিক অবস্থা দিন দিন উন্নত হচ্ছে। শহর এলাকার অধিকাংশ ঘর পাকা, কিছু আধা পাকা ঘরও দেখা যায়।
এ উপজেলার অধিকাংশ লোকের পেশা কৃষি। এছাড়া রয়েছে সরকারী-বেসরকারী চাকুরিজীবী, বিভিন্ন ব্যবসায়ী ও অন্যান্য পেশার লোক। প্রধান ব্যবসা ধান হতে চাল তৈরী। এ উপজেলায় মোট ৪০০টি চাউল কল রয়েছে। কিছু সংখ্যক মহিলারা নকশী কাঁথা ও বেনারসী শাড়ী তৈরী করে আর্থিক স্বচ্ছলতা এনেছেন।
ঈশ্বরদী উপজেলার সাধারণ অধিবাসীদের প্রধান খাবার ভাত, ডাল, সব্জি এবং মাছ। তবে বর্তমানে মাছের পরিমাণ কমে যাওয়ায় এবং মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় লোকজন পরিমাণ মত মাছ খাদ্য হিসেবে গ্রহণকরতে পারছেন না। ধনী শ্রেণীর লোকেরা পরোটা, পাউরুটি, মাখন, ডিম, সব্জি দিয়ে সকালের নাস্তা করেন। দুপুরে ও রাতে ভাত, সব্জি, মাছ, মাংস ও ডাল খান। মাঝে মধ্যে ভাতের পরিবর্তে পোলাও/ বিরিয়ানী খেয়ে থাকেন। গরীব লোকেরা সকালে পান্তা ভাত, মুড়ি, চিড়া প্রভৃতি খান। দুপুরে ও রাতে ভাত, সব্জি ও ডাল খান। তারা মাসে ২/৩ দিন খাবারের সাথে মাছ খেতে পারেন। শহরের লোকেরা গ্রামের লোকদের চেয়ে বেশী পরিমাণে মাংস ও রুটি খান। চা পানের অভ্যাস লোকজনের মধ্যে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিভিন্ন অনুষ্ঠান উপলক্ষে লোকজন বিভিন্ন ধরনের পিঠা, পায়েস, খৈ, মিষ্টি ও বিস্কুট খেয়ে থাকেন। কিছু সংখ্যক হিন্দু ভেজিটেরিয়ান, তারা মাছ-মাংস খান না। দেশের অন্যান্য এলাকার লোকজনের পরিধেয় বস্ত্রের সাথে এ এলাকার মিল দেখা যায়। সাধারণতঃ বাড়িতে পুরুষরা লুঙ্গি, গেঞ্জি এবং মহিলারা শাড়ি, পেটিকোট, ব্লাউস এবং মেক্সি পরিধান করেন। শিক্ষিত পুরুষরা বাড়ির বাইরে প্যান্ট, শার্ট এবং পাঞ্জাবী পড়েন, কেহ কেহ শীতকালে স্যুট, টাই এবং জুতা পড়েন। পুরুষ এবং মহিলা উভয়েই পায়ে স্যান্ডেল পড়েন। খুব গরীব লোকেরা খালি পায়ে চলাফেরা করেন। সকল সম্প্রদায়ের মহিলারা সাধারণতঃ শাড়ী, সালোয়ার ও কামিজ পড়েন তবে বিবাহিতা হিন্দু মহিলারা পড়েন শাড়ী এবং হাতে শাখা। কিছু মুসলিম মহিলারা বোরকা পড়েন। বালকেরা সাধারণতঃ হাফপ্যান্ট, শার্ট, টি-শার্ট এবং বালিকারা ফ্রক এবং হাফপ্যান্ট পড়েন। ধনী মহিলারা স্বর্ণের এবং গরীব মহিলারা রূপার তৈরী গহণা পড়েন। আদিবাসী সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব পোশাক ও গহনা পরিধান করে থাকেন।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS